৭ দিন পরও সুড়ঙ্গে আটকে সেই ৪১ শ্রমিক, লাগতে পারে আরও ৪-৫ দিন
পোস্ট করেছেন: অনলাইন ডেক্স | প্রকাশিত হয়েছে: ১৯/১১/২০২৩ , ২:১৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: আন্তর্জাতিক


ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন টানেলের ভেতর এখনও আটকে আছেন সেই ৪১ জন শ্রমিক। গত সপ্তাহে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটির একটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর কেটে গেছে ১৭০ ঘণ্টা বা ৭ দিনেরও বেশি সময়।
আটকে পড়া এই শ্রমিকদের উদ্ধারে লাগতে পারে আরও ৪-৫ দিন। যদিও ওই ৪১ শ্রমিককে উদ্ধার করতে একসঙ্গে পাঁচ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। রোববার (১৯ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, দীপাবলির উৎসবে মেতে ওঠার প্রস্তুতির মধ্যেই গত সপ্তাহের রোববার ভোরে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গে ধস নামে। এতে ভেতরে আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক।
অবশ্য ধসের ঘটনার পর থেকে এতদিন ৪০ জন শ্রমিকের কথা বলা হলেও শনিবার সেই সংখ্যা ৪১ বলে জানানো হয়।
সেই ঘটনার পর সপ্তাহ পেরিয়ে আবারও রোববার এসে গেলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি ওই শ্রমিকদের। টানেলের মধ্যে শ্রমিকদের আটকে থাকার সময় যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে ততই তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদ্বেগ গুরুতরভাবে বাড়ছে।
অবশ্য শ্রমিকরা সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে তাদের মনোবল ধীরে ধীরে ভেঙ্গে পড়ছে বলেও জানানো হয়েছে। তাদের উদ্ধারে অব্যাহত চেষ্টা চালানো হলেও এখনও সাফল্যের মুখ দেখেনি উদ্ধারকারী দলগুলো। উদ্ধারকারী মেশিনে যান্ত্রিক ত্রুটি, নতুন করে ধস নামাসহ একের পর এক সমস্যা দেখা দিচ্ছে উত্তরকাশীর এই সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজে।
আর এবার ৪১ শ্রমিককে উদ্ধার করতে একসঙ্গে পাঁচ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার জানানো হয়েছিল, অগার মেশিন দিয়ে সোজাসুজি খননের চেষ্ট খুব বেশি সফল না হওয়ায় এবার উলম্ব বা সুড়ঙ্গের ছাদ খুঁড়ে ৪০ শ্রমিককে উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রোববার থেকেই সেই কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে আরও উদ্ধারকারী দল যাতে সহজে সুড়ঙ্গের কাছে পৌঁছাতে পারে, তার জন্য নতুন রাস্তা বানাচ্ছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন। রোববার দুপুরের মধ্যেই এই রাস্তা তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
তবে বিপর্যয়ের পর সাতদিন কেটে গেলেও এখনও সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হতে না পারায় মনোবল ভেঙে যাচ্ছে শ্রমিকদের। তাদের পরিবার ও অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও বিশেষজ্ঞ দল। তারাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঁচটি পদ্ধতিতে উদ্ধারকাজ চালানোর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ভাস্কর খুলবে বলছেন, ‘বিশেষজ্ঞরা একমত হয়েছেন যে, আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে শুধুমাত্র একটি পরিকল্পনায় কাজ করার পরিবর্তে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে একসঙ্গে পাঁচটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা উচিত।’
খুলবে বলেন, সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি যথেষ্ট সদয় হন তবে তার চেয়েও আগে শ্রমিকদের উদ্ধার করা যেতে পারে।
ভাস্কর আরও বলেন, ‘সুড়ঙ্গের একটা দিকে রয়েছে সিল্কিয়ারা, অন্য দিকে বারকোট। সিল্কিয়ারার দিকে সুড়ঙ্গের ভেতরে ধস নামে। সেদিক থেকেই উদ্ধারকাজের চেষ্টা চলছে সবচেয়ে বেশি।’
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর ভোর ৪টায় উত্তরাখণ্ডের নির্মাণাধীন এই টানেলের ভেতরে ধসের ঘটনা ঘটে। টানেলটিতে নির্মাণকাজ চলছিল। বহু শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন। সেই সময় হঠাৎ করেই সুড়ঙ্গের কাঠামো ভেঙে পড়ে।
আর এরই জেরে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েন ওই ৪১ জন শ্রমিক।