মান্দায় গভীর নলকূপের অপারেটর পরিবর্তনের দাবিতে কৃষকদের সংবাদ সম্মেলন
পোস্ট করেছেন: অনলাইন ডেক্স | প্রকাশিত হয়েছে: ১৪/০৯/২০২৩ , ৪:০২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ,রাজশাহী বিভাগ


মাহবুবুজ্জামান সেতু,মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের অপারেটর বাহার আলীর বিরুদ্ধে টাকা নিয়েও জমিতে সেচ না দেওয়ার অভিযোগে উঠেছে।
এর প্রতিবাদে বৃহষ্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দূর্গাপুর মধ্যপাড়া মসজিদের মোড়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এতে প্রায় ৫০ জন কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, মান্দা উপজেলা ক্ষেত মজুর সমিতির সভাপতি সেকেন্দার আলী, ভুক্তভোগী কৃষক আছির উদ্দিন মন্ডল, আশরাফুল ইসলাম, আবুল কাসেম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নজরুল ইসলাম মোল্লা,হাসেন আলী,সাইদুর রহমান এবং বাবু সরদার প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষকরা বলেন, ২০ থেকে ২২ বছর আগে এই গ্রামে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) কৃষকের কথা চিন্তা করে গভীর নলকূপের স্থাপন করেন। এই গভীর নলকূপ থেকে অন্তত ৭০-৮০ জন কৃষক ১৩০ বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে চাষাবাদ করেন। চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে বিঘা প্রতি ১২০০ টাকা করে নেওয়ার পর ১ বার সেচ দিয়ে ধান লাগানোর পর আর জমিতে কোন সেচ দিচ্ছেন না অপারেটর বাহার আলী। দিনের পর দিন সেচের জন্য ঘুরতে হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় অতিরিক্ত টাকাও নিয়ে থাকেন তিনি। এসব বিষয়ে উপজেলা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে সময়মতো সেচের পানি না পেলে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তাই দ্রুত কৃষকের স্বার্থে অপারেটর পরিবর্তন করে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া ও সেই সাথে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানোর দাবি জানান কৃষকরা।
কৃষক আছির উদ্দিন মন্ডল, আশরাফুল ইসলাম, আবুল কাসেম বলেন- ওই গ্রামের বরেন্দ্র বহুমুখী কর্তৃপক্ষের পরিচালিত গভীর নলকূপের অপারেটর বাহার আলী চলতি আমন মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ১২০০ টাকা করে নেন। কিন্তু এক সেচ দেওয়ার পর থেকে জমিতে সঠিক সময়ে সেচ দিতে চায়না। বেশি ভাগ সময় গভীর নলকূপে তালা দেওয়া থাকে। দিনের পর দিন ঘুরতে হয় তার পিছনে। বর্তমানে বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে। ফলে সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দিতে না পারলে ফলন ভালো হবে। কৃষকরা তার কাছে জিম্মি।
কৃষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, নজরুল ইসলাম মোল্লা,হাসেন আলী, সাইদুর রহমান বলেন- ইরি-বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি ১৭০০ টাকা করে নেন। আমন মৌসুমে ১২০০ টাকা করে নিয়েছেন। বিভিন্ন সময় কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকাও নিয়ে থাকেন তিনি। কিন্তু সঠিক সময়ে জমিতে সেচ দেওয়া হয় না।
তারা আরও বলেন, রোদে-পুড়ে আমরা চেষ্টা করি ভালো ফসল ফলানোর জন্য। এসব ফসলের ওপর আমাদের সংসার চলে। এখন যদি সেচের ওভাবে ভালো ফলন না হয় তাহলে আমরা সংসার কিভাবে চালাবো। তাই আমরা চাই অপারেটর পরিবর্তন করে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। এতে করে আমাদের সমস্যগুলো সমাধান হবে।
সম্প্রতি প্রতারণার মামলায় কারাগারে থাকায় এসব অভিযোগের বিষয়ে নলকূপের অপারেটর বাহার আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মান্দা উপজেলা বিএমডিএ’র সহকারি প্রকৌশলী এস.এম মিজানুর রহমান বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।