ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার
পোস্ট করেছেন: অনলাইন ডেক্স | প্রকাশিত হয়েছে: ২২/০৮/২০২৩ , ২:৫৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: শিক্ষাঙ্গন


ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা ও তার চার সহযোগীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার ছয় মাস পর চূড়ান্ত এ রায় দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
সোমবার (২১ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান জানান , সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন গৃহীত এ সিন্ধান্ত হাইকোর্টে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী। এরমধ্যে অন্তরা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের। এছাড়া বাকি সবাই ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন বলেন, এই বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায় বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠ এবং সর্বোচ্চ বিচার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করেছে। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেনো শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে না অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও পুনরাবৃত্তি না হয়। এরকম কঠোর বিচার হলে ভবিষ্যতে আর কেউ সাহস পাবে না। শুধু র্যাগিংই না এর সঙ্গে অন্য কোনো শারীরিক মানসিক জুলুমের মতো আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। এ রকম সঠিক বিচার হলে ক্যাম্পাসে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়াশুনা শেষ করে বের হতে পারবে।
নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে কি না এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। কোনো রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না। খুব বেশী প্রয়োজন না হলে আমি হল থেকে বের হইনা।
এর আগে, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাতভর ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ওই ছাত্রী।
এ ঘটনায় হল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হাইকোর্ট ও শাখা ছাত্রলীগসহ পৃথক ৪টি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের আলোকে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযুক্ত ৫ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়াও হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগ তাদের তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বহিষ্কার করে।