মাদারীপুরে হাসি বিলাচ্ছে সূর্যমুখী
পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ০৭/০৪/২০২২ , ৬:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ

ইব্রাহিম সবুজ, স্টাফ রিপোর্টার (মাদারীপুর):-
মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন কৃষকরা। প্রথম বছরেই উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের কর্নপাড়া এলাকায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর ফুলের চাষাবাদ করা হয়। সূর্যমুখীর ফসলের ফলন ভাল হয়েছে, ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সূর্যমুখী একটি উ্চ্চ মূল্যের ফসল এবং অন্য সব তেলের চেয়ে সূর্যমুখীর তেল পুষ্টি গুনে ভরা এবং এর দামও বেশি। সূর্য মুখীর বীজে লিনোলিক এসিড বিদ্যমান থাকায় এতে স্বাস্থ্য ঝুকি কম থাকে। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী। সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায় তবে অগ্রহায়ন মাসের মধ্য চাষ করলে এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।
কালকিনি উপজেলা কৃষি পুর্নবাসন ও প্রনোদনা কর্মসূচি এবং কৃষি প্রর্দশনীর আওয়তায় এ চাষাবাদ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনা মূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক কৃষকের মাঝে বিতরন করা হয়। এবং ভাল ফলন পাওয়ার আশায় সার্বিক সহযোগিতা করা হয়। কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সূর্যমুখীর ফলন ভাল হয়েছে।
কৃষি মাঠ ঘুরে দেখা যায় ,কালকিনির বালিগ্রাম ইউনিয়নের কর্নপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলামের ১২০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষাবাদ করা হয়েছে । কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন – সূর্যমুখী চাষ করে আমি অনেক খুশি এর ফলন অনেক ভাল হয়েছে এবং সূর্যমূখী তেলের বাজার মূল্য অনেক বেশি। আমার সূর্যমুখী চাষের ফলন দেখে আগামী বছর থেকে আমাদের এলাকার অনেকেই চাষাবাদ করবে। তিনি আরো বলেন এখন থেকে এই জমিতে সূর্যমুখীর চাষই করবো।
উপ-সহকারি কৃষি অফিসার কাজী সুলতানুল সুজা বলেন কালকিনি উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের এই কৃষক শহিদুল ইসলাম ১২০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছে। এর জাত হচ্ছে হাইসন-৩৩ , ফলনটা খুবই ভাল হয়। এভাবে যদি চাষাবাদটা বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে আমাদের দেশে সয়াবিনের যে উচ্চ মূল্য রয়েছে তা কিছুটা হলেও লাঘব হবে এবং আমরা চাচ্ছি এ আবাদটা কৃষদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কারন অন্যান্য তেলের তুলনায় সূর্যমুখী তেলের দাম অনেক বেশি। সূর্যমুখী চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কালকিনি উপজেলা কৃষি অফিস সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
কালকিনি উপজেলা কৃষি অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা কৃষি পুর্নবাসন ও প্রনোদনা কর্মসূচি এবং কৃষি প্রর্দশনীর আওয়তায় এ চাষাবাদ করা হয়। এ বছর প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে আমরা সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। আমরা জানি যে ,সূর্যমুখী তেলে ভিটামিন এ, ডি এবং কে রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমরা সয়াবিন তেলে পরিবর্তে যদি সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমাদের সাস্থ্য ঝুকি কম থাকবে। সূর্যমুখী ফসল অত্যন্ত লাভ জনক । আমরা যদি এ আবাদ আরো বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে সয়াবিন তেল আমদানি করতে যে পরিমান বৈদাশিক মুদ্রা ব্যয় করি সেই অর্থ সাশ্রয় হবে এবং এ টাকা আমাদের দেশে থেকে যাবে। পাশাপাশি আমাদের দেশে যে যুব সমাজ আছে তারা যদি সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষাবাদ বৃদ্ধি পাশাপাশি বেকার সমস্যার সমাধান হবে।