দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে রংপুরে বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ০৩/০৪/২০২২ , ৭:০৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ


মোঃ সাকিব চৌধুরী, রংপুর মহানগর প্রতিনিধিঃ
পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে হাট-বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বাড়ছে জিনিষপত্রের দাম। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি তারা বেশি দামে পণ্য কিনে কিছুটা লাভ রেখে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। এখানে তাদের কিছুই করার নেই। অপরদিকে একই দাবী আড়ৎদার গুলোর মালিকদের। যানবাহনের ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাইরে থেকে বেশি মূল্যে মালামাল কেনায় তাদেরকে দাম বাড়াতে হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে। আড়তে এবং খুচরা বাজারে হঠাৎ করে কিছু পণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পরেছে খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের আয় অনুযায়ী ব্যয় করতে গিয়ে হিমসীম খাচ্ছে পরিবারের লোকজন।
এদিকে দ্রব্যমূল্যের রাশ টানতে জেলা প্রশাসন, কৃষি বিপনন অধিদপ্তর ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারগুলোতে দফায় দফায় মনিটরিং করায় কিছু প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। রোজায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ছোলা, আলু, সয়াবিন তেল, পিয়াজ ও রসুনের মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে বলে তথ্য উঠে এসেছে।
সরেজমিন রংপুর সিটি বাজার, কামাল কাছনা বাজার ও কামারপাড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে কাচাবাজারগুলোতে হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে জিনিষপত্রের মূল্য। মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। আদর্শ পৌরবাজারের কাচামাল ব্যবসায়ী আয়নাল জানান, আড়তে মুল্য বৃদ্ধি হওয়ায় গত এক সপ্তাহে কিছু প্রয়োজনীয় কাচামালের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। গত সপ্তাহে কেজিতে গোল বেগুনের মূল্য ছিল ৩৫টাকা রবিবার (০৩ এপ্রিল) বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকায়, লম্বা বেগুন ছিল ২৫টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০টাকা, করলা ৪৫টাকা, এখন ৬০টাকা, কাচা মরিচ ৪৫টাকা, এখন ৬০টাকা, শষা ৩০টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০টাকা। এভাবে বেশ কিছু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
কামাল কাছনা বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হক জানান, মোটা চাল কেজিতে ২ থেকে ৩টাকা এবং আতপ চাল কেজিতে ৮ থেকে ১০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া খোলা আটা, লবন, সুজি, ডাল, সাবান প্রভৃতি পণ্যের মূল্য ৫ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাচামাল কিনতে এসে ভ্যানচালক মজিবর ও রিক্সাচালক আলম জানান, রমজান আসলেই জিনিসপত্রের দাম হু-হু করি বাড়ি যায়। এই সময় গরীব মানুষের জন্য খুব কষ্ট হয়। এল্যা কম করি জিনিষ কিনি পেট চালবার নাগছি।
সাত মাতা মাহিগঞ্জ বাজারে শাক কিনতে এসে ক্রেতা জাহানারা বেগম জানান, হঠাৎ করে শাকের দাম বেড়ে গেছে। এখন ২০ টাকার নীচে শাক পাওয়া যাচ্ছে না।
সিটি বাজারের বাজার করতে এসে শহরের দিনমজুর টিটু জানান, সারাদিন কাম করি সাড়ে তিনশ টাকা পাই। সেটে চাউলের দাম ৪৫টাকা, গোসতোর দাম ৬০০টাকা, মাছের দাম ৩০০থাকি ৫০০টাকা, তরিতরকারিতো আছেই। ঘরোত ৫জন খাওয়াইয়া। রোজার মাসে হামরা কামলা দেওয়া মানুষ চলমো কিভাবে।
সিটিবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সুলতান জানান, এখন বাজারদর চড়া, যানবাহনেও ব্যয় বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে লাভ করতে গিয়ে কিছুটা দাম বাড়াতে হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রংপুর জেলা’র সহকারি পরিচালক জানান, গত মার্চ মাসে জেলায় ১১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১লক্ষ ২৯হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কোথাও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।