আজ: ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, বিকাল ৫:৫৬
সর্বশেষ সংবাদ
জেলা সংবাদ ডাক্তারের ভুলে লাইফ সাপোর্টে মা, দাদির কোলে অসহায় নবজাতক

ডাক্তারের ভুলে লাইফ সাপোর্টে মা, দাদির কোলে অসহায় নবজাতক


পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ১৬/০৩/২০২২ , ৬:৪২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ


ই এম আসাদুজ্জামান আসাদ:   রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে প্রসূতি মা আর ১দিনের নবজাতক শিশু রয়েছে দাদার বাড়িতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিশন হাসপাতালের ডাঃ কামরুন্নাহারের ভুল চিকিৎসার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে । এ ঘটনার পরও নিজের চেম্বারে রোগী দেখতে ব্যস্ত ডাঃ কামরুন্নাহার। এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ তিনি এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

লাইফ সাপোর্টে থাকা প্রসূতি সৈয়দা নিহা নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের সৈয়দ মনির মিয়ার স্ত্রী। স্বামী মনির মিয়াও স্ত্রীর সাথে অবস্থান করছেন ঢাকায়। একাকি নবজাতক সন্তান রয়েছে তার দাদা-দাদির কাছে।

এ বিষয়ে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে অবস্থান করা প্রসূতি নিহার ভাগিনা নাহিয়ান আহমেদ জানান, ১৫মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া মিশন হাসপাতাল থেকে রেফার করে ঢাকার সেন্ট্রাল হসপিটালে নিয়ে আসি। তখম সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডাক্তার জানান মামনির লাইফ সাপোর্ট প্রয়োজন। তখন সেখান থেকে স্কয়ার হসপিটালে এনে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আর আজ ১৬মার্চ সকালে নবজাতক শিশুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিশন হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে এখনো মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কোন আলোচনা হয়নি। তারাও যোগাযোগ করেনি।

ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে এই ব্যাপারে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিশন হাসপাতালে ডাঃ কামরুন্নাহারের চেম্বারে গেলে দেখা যায় রোগীদের লম্বা সিরিয়াল। ব্যস্ততা দেখিয়ে প্রতিবেদককে দীর্ঘক্ষন বসিয়ে রাখার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ইনচার্জ পরিচয়ে তমাল নামের একজন জানান, এ বিষয়ে ডাক্তার কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন কথা বলতে চাচ্ছেন না। প্রয়োজনে তারা সিভিল সার্জন এর সাথে কথা বলবেন।

এদিকে এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। ডাঃ কামরুন্নাহার এবং মিশন হাসপাতালের বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের শেষ নেই। এই বিষয়ে ভুক্তভোগীদের কয়েকজনের মন্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক সৈয়দ সানি জানান, বিচার চাই..
চিকিৎসকের নামে একজন ব্যবসায়ী কামরুন্নাহার বাধ্য করাই মানুষকে সিজার করাতে.. ৯ মাস আল্ট্রা নিজেও করাবো কমিশনে বাহির হাসপাতালে পাঠাবে লাষ্ট আওয়ারে বলবে কন্ডিশন ভালো না সিজার জুরুরি। সিজার রুমে মহিলাদের শীলতাহানি হয়…পুরুষ মহিলা উপস্হিতিতে বাজে রুপে সিজার করানো হয়.. আবার নিজে সুরুত ধরে মৌলভীর।
জেলা ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার হোসেন রাশেদ জানান, এটার বিরুদ্ধে আমরা মিছিল করেছিলাম। শালারা জানোয়ার।
তানিয়া সুলতানা নামে একজন জানান, এই মহিলার একটা ব্যাবস্থা হওয়া উচিৎ। আমি ৪ ঘন্টা মিশনে ছিলাম তাও একটা বার এসে দেখে নি আমাকে। উল্টো আমার পরিবারকে ধমকাইছে।
নোঙর এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি শামিম আহমেদ জানান,কয়েকটি ঘটনা চোখের সামনে ঘটেছে। ডাঃ কামরুন্নাহারের নাম শুনলেই মেজাজ খারাপ হয়।
তামান্না আক্তার নামে একজন জানান, এর আগেও আমার এক আত্মীয়র  নবজাতক শিশু এই ডাক্তারের ভুলে মারা যায়।
এমন অসংখ্য অভিযোগ মানুষ টাইমলাইনে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, এই বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে নিয়ম অনুযায়ী ডাক্তার ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে চিকিৎসক কামরুন্নাহার এর সাথে ২৫ হাজার টাকায় নরমাল ডেলিভারির চুক্তির পর ওই ক্লিনিকে ভর্তি হোন ভুক্তভোগী নিহা।  ১৫মার্চ সকালে নরমাল ডেলিভারির সময় চিকিৎসকের ভুলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে, রোগীকে ৩বার অপারেশন করেন চিকিৎসক। কিন্তু তবু রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে চিকিৎসক পালিয়ে যান।
পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ উপায় না পেয়ে রোগীকে দ্রুত হেলিকপ্টার করে পাঠানোর কথা বলে। কিন্ত ৩ঘন্টায়ও হেলিকপ্টারের কোন খবর হয়নি। পরে রোগীর স্বজনরা নবজাতক শিশুকে মিশন হাসপাতাকে রেখেই এম্বুলেন্সে করে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা পাঠান।

 

Comments

comments