আজ: ১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি, সকাল ৯:১৪
সর্বশেষ সংবাদ
জেলা সংবাদ সজিনার সাদা ফুল: প্রকৃতি সেজেছে আপন মহিমায়

সজিনার সাদা ফুল: প্রকৃতি সেজেছে আপন মহিমায়


পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ১৩/০৩/২০২২ , ৭:০৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ


গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায়  প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে নানা সাদা ফুলের বর্ণিল সাজে সেজেছে শস্য ভান্ডার সজিনা গাছগুলো। সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামল ভরা আমাদের এ বাংলাদেশের একেকটি ঋতু একেক রুপ ও রঙ নিয়ে হাজির হয়। ঠিক তেমনি এ উপজেলার বাড়ির আনাচে কানাচে ও রাস্তার পাশে থাকা সজিনার গাছগুলো থোকায় থোকায় সাদা সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। মৌ মৌ করছে চারপাশ। সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আল ফুল। এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝড়ে পড়ে। পাতা শূন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলেই মহিত হয়। সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় এক বৃক্ষ। অলৌক গাছ হিসেবে সজিনা পরিচিত। ইংরেজিতে সজিনার নাম ড্রামস্ট্রিক। যার অর্থ ঢোলের লাঠি। নামটি অদ্ভুত হলেও এটি অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সবজি জাতীয় একটি উদ্ভিদ।  এই সজিনা গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন বাড়ির গৃহিনীরা। তারা সজিনা মৌসুমে সজিনা বিক্রি করে হাতের খরচ হিসেবে অর্থ সঞ্চয় করেন। এ গাছের পাতা, ফুল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজিনার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এ গাছের অনেক গুণ থাকায় এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়। কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে ভর্তা করে ও বড়া ভেজে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। ফল সবজির মতো রান্না করে খাওয়া যায়, ফল পাকলে যেসব ফলের বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ১শত হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ হাজারেরও অধিক সজিনার গাছ আছে। প্রতিটি বাড়িতে কমপক্ষে ২/টি গাছ রয়েছে। এসব গাছ বাড়ির পাশে ও ক্ষেতের আইলে লাগানো হয়। গাছে ফলনও বেশি হয়। যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে উঠেছে।  বাংলাদেশে দুইটি জাত আছে সজিনা ও নজিনা। গ্রাম্যে ভাষায় জাতি সজনা ও ঝুল সজনা। সজিনার ফুল আসে জানুয়ারিতে আর নজিনার ফুল আসে মার্চ মাস থেকে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। একটি থোকায় সর্বাধিক ১৪৫ থেকে ১৫০টির মত ফুল ধরে। ফুল ৪০ সেমি. থেকে ৮০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুল ফুটার ২ মাস পর ফল তোলা যায়। একটি বড় গাছে ৪শত থেকে ৫শত ফল ধরে। প্রতিটি ফলে ৩০-৪০টি বীজ হয়। দেশে সাধারণ ডাল কেটে ডাল রোপন করলে সজিনা গাছ তৈরি হয়। সজিনা চাষিরা উচ্চ মূল্য পাওয়ায় সজনের ডাল লাগানো সজিনা গাছ যত্ন ছাড়াই  অবেহলার মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠে। সজিনার পুষ্টি ও ভোজন গুণ সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি। সজিনার ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই সবজিটি বাজারে মৌসুমের শুরুর দিকে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, অলৌক গাছ সজিনা। ঠান্ডা-গরম, লবন, খরা সহিষ্ণ পরিবেশে এই গাছ বাংলাদেশের সবত্রই জন্ম নেয়। এ উপজেলার মাটিতে সজিনা আবাদ ভাল হচ্ছে। এ বছর সজিনা গাছে ব্যাপক ফুল ধরেছে। বড় ধরনের দূর্যোগ না হলে সজিনার বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত সজিনা গাছের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকরা সজনের উচ্চ মূল্য পাওয়ায় তারা লাভবানও হচ্ছে।

Comments

comments