করোনায় প্রবাস ফেরত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহাবুদ্দিন এখন মাদক ব্যবসায়ী
পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ০৭/০৩/২০২২ , ৪:২৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ,প্রধান সংবাদ

ই এম আসাদুজ্জামান আসাদ :
আখাউড়া উপজেলার মনিয়ান্দ ইউনিয়নের খারকোট গ্রামের মোতালেব সরকারের ছেলে সাহাবুদ্দিন(৩৬)। সংসারের অভাব ঘুচাতে ২০০৮ সালে চাকুরী করতে সৌদী আরবে যান। প্রবাসজীবন কালে মাঝে মধ্যে ছুটি নিয়ে দেশে আসতেন। ধীরে ধীরে পরিবারের অভাব সামলে নেন। আর্থিক সচ্চলতাও ফিরে আসে সংসারে। ২০১৬ সালে বিয়ে করে যৌথপরিবার থেকে আলাদা হয়ে পৃথক সংসারজীবন শুরু করেন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তাদের বাবা-মায়ের কোলজুড়ে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নিজ সন্তানকে সুশিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যাশায় অন্য সকলের মত গেলবছর বাচ্চাকে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্ডেনে ভর্তি করান। গতবছর করোনা পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করে, তখন দেশে ফিরে আসেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সাহাবুদ্দিনের আর সৌদী আরবে ফেরা হয়নি। ভাবতে থাকেন দেশে কিছু একটা করতে হবে। সীমান্তবর্তী গ্রামে তার বাড়ী বিধায় এ সুবিধাটা কাজে লাগানোর চিন্তা করেন। সীমান্তের ওপার থেকে কমদামে গাঁজা কিনে এনে ঢাকা বা বাইরের পার্টির কাছে দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভে বিক্রি করে দ্রুত অনেক টাকা-পয়সা কামানোর লক্ষ্যে তারই বাল্যবন্ধু স্থানীয় আরেক মাদক কারবারীর পরামর্শে এ ঘৃণ্য পথ বেছে নেন। কথায় আছে সাত দিন যদি চোরের হয় একদিন গৃহস্থ্যের হবেই। ঠিক সেভাবেই সাহাবুদ্দিনের সাতদিনও ফুরোয়। গৃহস্থ্যের দিন চলে আসে। ৬ মার্চ বিকেল অনুৃমান ৪: ২০ মিনিটের দিকে সীমান্তের এপার থেকে আনা ১০ কেজি গাঁজা একটি সিএনজি যোগে পাচারের চেষ্টাকালে খারকোটস্থ নিজ বাড়ীর সামনে পাকা রাস্তার উপর থেকে সহযোগী সিএনজিচালক একই উপজেলার মোগড়া উত্তরপাড়া মনোজ মেম্বার বাড়ীর আলতাফ ভূঁইয়ার ছেলে জালাল ভূঁইয়া(৩৫) সহ হাতেনাতে ধরা পড়েন আখাউড়া থানা পুলিশের মাদকবিরোধী স্পেশাল টিমের কাছে।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের জীবনের এ গল্প তুলে ধরেন সাহাবুদ্দিন। অন্যের সন্তানদের সেবনের জন্য মাদক পাচার করলেও নিজের সন্তানের হাতে তিনি মাদক দেখতে চাননা। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং জানান, সীমান্ত এলাকার কিছু কিছু লোক মাদক ব্যবসাকে অন্য আট-দশটা সাধারণ ব্যবসার মতই মনে করেন। স্থানীয় এক মাদক কারবারী বাল্য বন্ধুর পরামর্শেই মাদককারবার খারাপ জেনেও অল্প সময়ে বেশী লাভের আশায় তিনি এপথে নেমেছেন বলে পুলিশকে জানান। অসৎ সঙ্গে চরম সর্বনাশ ঘটে একসময়ের অদম্য প্রবাসী যুবক সাহাবুদ্দিনের। গ্রেপ্তারের পর তার মনে হয়, এ পথে নেমে তিনি ভুল করেছিলেন।
এ ঘটনায় আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।