আজ: ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, দুপুর ১:৫৪
সর্বশেষ সংবাদ
খেলাধূলা মায়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে জয় পেল উইন্ডিজ

মায়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে জয় পেল উইন্ডিজ


পোস্ট করেছেন: অনলাইন ডেক্স | প্রকাশিত হয়েছে: ০৭/০২/২০২১ , ৪:৪০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: খেলাধূলা


ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কাছে পাত্তা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে টেস্টে দুর্দান্ত। অভিষেকে কাইল মায়ার্সের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে চমকে দিলো উইন্ডিজ। শেষ দিন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের অনবদ্য পারফরম্যান্সে ৩ উইকেটের জয়ে দুই টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

 

অভিষেকে উজ্জ্বল কাইল মায়ার্স। পুরো টেস্টে একবারের জন্যেও বুঝতে দেননি এটিই তার প্রথম টেস্ট। বাংলাদেশি বোলারদের শাসন করে সাগরিকায় রীতিমতো দাপট দেখালেন সফরকারী এই ব্যাটসম্যান। চতুর্থ দিন ৩৭ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেছিলেন। শেষদিনে সেখান থেকে নিজের ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলেন অনন্য উচ্চতায়। নাম লেখালেন রেকর্ড বইয়ে। খেললেন ৩১০ বলে ২১০ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। লিখলেন জয়ের গল্প। দলকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়ে তবেই ছাড়লেন মাঠ।

শেষ সেশনে খেলা প্রায় ২০ ওভার বাকি থাকতে জয়ের জন্য ৮২ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। শেষ বিকেলে টেস্ট ম্যাচকে অনেকটা টি টোয়েন্টি স্টাইলে খেলে জয় তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা। টেস্ট অভিষেকে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে পূর্ণ করেন ডাবল সেঞ্চুরি করেন এই বাঁহাতি। তার ব্যাটে ভর করে ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ক্যারিবীয়রা।

একে একে সতীর্থরা সবাই চলে গেলেও কাইল মায়ার্স খেলে গেলেন শেষ পর্যন্ত। আর সেই সঙ্গে রেকর্ড গড়ে দলকে জেতালেন। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট ম্যাচে ৩ উইকেটে জয় পেয়েছে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তারা।

 

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভালো ছিল না সফরকারীদের। দলীয় ৩৯ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জন ক্যাম্পবেল। আউট হওয়ার পূর্বে করেন ২৩ রান। ব্যক্তিগত ২০ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট করতে আসা শেইন মসেলি আউট হন ১২ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম তিন উইকেটই নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

নিজেদের দ্বতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারানো উইন্ডিজের হয়ে মাঠে শক্তভাবে অবস্থান নেন কাইল মায়ার্স এবং এনক্রমা বোনার। অভিষিক্ত এই দুই ব্যাটসম্যান ২১৬ রানের জুটি গড়ে রেকর্ডে নাম লেখান। টেস্ট ইতিহাসের দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ। চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সেরা জুটি এটিই। ২৪৫ বলে খেলে ৮৬ রান করা বোনারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। পরের উইকেটে ব্যাট করতে নামা জার্মেইন ব্ল্যাকউড আউট ৯ রানে।

এই দুই উইকেটের পর জয়ের আশা দেখছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু টাইগারদের দেখা স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেয় মায়ার্স। অভিষেক ম্যাচই ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ক্যারিবীয়

গত ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ম্যাচটি। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৪৩০ রান করে অলআউট হয়েছিল। মেহেদী হাসান মিরাজ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১০৩ রান করে আউট হয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নেমে ২৫৯ রান করে অলআউট হয়। সফরকারী দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। বল হাতে মিরাজ ৪টি উইকেট নিয়েছিলেন।

এরপর বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২২৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশ ১৭১ রানের লিডে ছিল। তাই জয়ের জন্য ক্যারিবীয়দের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৩৯৫ রান।

 

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৩০ (১৫০.২ ওভার)

(সাদমান ৫৯, তামিম ৯, শান্ত ২৫, মুমিনুল ২৬, মুশফিক ৩৮, সাকিব ৬৮, লিটন ৩৮, মিরাজ ১০৩, তাইজুল ১৮, নাঈম ২৪, মোস্তাফিজ ৩; রোচ ১/৬০, গ্যাব্রিয়েল ১/৬৯, কর্নওয়াল ২/১১৪, মায়ার্স ০/১৬, ওয়ারিকান ৪/১৩৩, ক্রেইগ ০/১৩, বোনার ১/১৬)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ২৫৯ (৯৬.১ ওভার)

(ক্রেইগ ৭৬, ক্যাম্পবেল ৩, মোসেলে ২, বোনার ১৭, মায়ার্স ৪০, ব্লাকউড ৬৮, জশুয়া ৪২, কর্নওয়াল ২, রোচ ০, ওয়ারিকান ৪, গ্যাব্রিয়েল ০*; মোস্তাফিজ ২/৪৬, সাকিব ০/১৬, মিরাজ ৪/৫৮, তাইজুল ২/৮৪, নাঈম হাসান ২/৫৪)।

 

বাংলাদেশ  দ্বিতীয় ইনিংস: ২২৩/৮ডি (৬৭.৫ ওভার)

(সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০, মুমিনুল ১১৫, মুশফিক ১৮, লিটন ৬৯, মিরাজ ৭, তাইজুল ৩, নাঈম হাসান ১*; রোচ ০/১৭, কর্নওয়াল ৩/৮১, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৭, ওয়ারিকান ৩/৫৭, বোনার ০/১৩, ক্রেইগ ০/৭, মায়ার্স ০/১১)।

 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস:

 

(ক্রেইগ ২০, ক্যাম্পবেল ২৩, মোসেলে ১২, বোনার ৮৬, মায়ার্স, ব্লাকউড ৯, জশুয়া; মোস্তাফিজ, তাইজুল, মিরাজ, নাঈম)।

Comments

comments