অপর্ণা থেকে চারুলতা, ফিরে দেখা পর্দায় সৌমিত্রর ভিন্ন রসায়ন
পোস্ট করেছেন: অনলাইন ডেক্স | প্রকাশিত হয়েছে: ১৫/১১/২০২০ , ২:১৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন


কারও কাছে প্রিয় ‘পুলুদা’, কারও কাছে সৌমিত্রবাবু, কারও কাছে আবার শুধুই সৌমিত্র। কেউ ছিলেন অপুর অপর্ণা, কেউ অমূল্যর মৃণ্ময়ী, কেউ আবার অমলের চারুলতা। পর্দায় এভাবেই বারবার সৌমিত্র-সঙ্গিনী হয়ে উঠেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সুচিত্রা সেন, তনুজা থেকে স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। প্রত্যেক নারীর সঙ্গে পর্দায় ভিন্ন রসায়ন ফুটিয়ে তুলেছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র।
“খাবার পর একটা করে কথা দিয়েছ”। হাসিমুখে স্ত্রীর আবদার রেখেছিল অপরাজিত। আর এই এক দৃশ্যেই পর্দায় অপু-অপর্ণার অমরগাথা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। হয়েছিল সৌমিত্র-শর্মিলা জুটির সফর। ক্যামেরার নেপথ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল দু’জনের। বন্ধুত্বের সেই রসায়ন পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছে ‘দেবী’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘বর্ণালী’র ভিত।
অমূল্য আর মৃণ্ময়ীর সম্পর্কে ছিল ভিন্নতার ছোঁয়া। শহুরে অমূল্য প্রথম দেখাতেই গ্রামের ডানপিটে মেয়েটার প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। মাত্র ১৬ বছরের অপর্ণার সঙ্গে ২৬ বছরের সৌমিত্রর বন্ধুত্ব হতে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি। শুটিংয়ের ফাঁকে নাকি সৌমিত্রর সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ খুঁজতেন অপর্ণা সেন। অনেক কিছু শিখতে পারতেন তাঁর থেকে। দু’জনের এই পারস্পরিক সম্মানের সম্পর্ক দর্শদকের উপহার দিয়েছে ‘আকাশ কুসুম’, ‘বাক্স বদল’, ‘নিশিমৃগয়া’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘পারমিতার একদিন’, ‘বসু পরিবার’।
“আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী”- চারুলতায় হৃদয়ে জড়িয়ে ছিল অমলের গাওয়া গান। রচিত হয়েছিল ‘নষ্টনীড়’-এর ভিত। বউদি হয়েও দেওর অমলের প্রতি চারুলতার অনুরাগকে দর্শক গ্রহণ করেছিল সৌমিত্র আর মাধবীর অভিনয়ের জোরে। ‘কাপুরুষ’, ‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’-এও স্বকীয়তার ছাপ রেখেছিল এই জুটি।
সুচিত্রা সেন। এই নামের সঙ্গে প্রথম নাম হিসেবে সবসময় উত্তমকুমারের নামই উঠে আসে। কেবল একটি সিনেমায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘সাত পাঁকে বাঁধা’ পড়েছিলেন সুচিত্রা। অসম্পূর্ণ হয়েও সম্পূর্ণতা পেয়েছিল অর্চনা ও সুখেন্দুর ভালবাসা।
“হয়তো তোমারই জন্য, হয়েছি প্রেমে যে বন্য”। এভাবেই ‘তিন ভুবনের পারে’ বাঙালির শাশ্বত প্রেমের কাব্য রচনা করেছিলেন সৌমিত্র-তনুজা (Tanuja) জুটি। ‘প্রথম কদম ফুল’-এর গন্ধের মতো আজও এই গান নতুন প্রজন্মের আবেগের স্রোতকে গতিপথ খুঁজে দেয়।
স্বদেশের আন্দোলন চুলোয় দিয়ে বিমলার সঙ্গে গল্প করে জীবন কাটিয়ে দিতে চেয়েছিল সন্দীপ। নিছকই কথার কথা! কিন্তু বাসনা-আকাঙ্খা মেশানো আবেগের বহিঃপ্রকাশ। সত্যজিৎ রায়ের ‘ঘরে বাইরে’ আজও ক্লাসিক। ক্লাসিক স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের রসায়ন। যা পরিণতি পেয়েছিল ‘বেলাশেষে’।
শেষের পর আবার নতুন শুরুর প্রতীক্ষা। পর্দায় আবার যখন ‘বেলাশুরু’ হবে। শুরু হবে অভিজাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নতুন জীবন। যে জীবন শিল্পীর শিল্পসত্ত্বায় অমর। যার ক্ষয় নেই। আছে কেবল স্মৃতি। স্মৃতির আধারে এভাবেই বোধহয় তৈরি হয় ঐতিহ্য। যে ঐতিহ্য মানুষকে চিরন্তন অনু