জন্মদিনে হুমায়ুন ভক্তের ভাবনা
পোস্ট করেছেন: online desk2 | প্রকাশিত হয়েছে: ১৩/১১/২০১৯ , ৮:৫৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: মতামত


হিমু হাটছে খালি পায়ে রাতের আধারে! খুঁজে চলছে পথের দিশা! কোন এক চাঁদনি পসর রাতে জোছনা গাঁয়ে মেখে হিমু বাড়ি ছেড়েছিলো আর ফেরা হয়নি তার। কেউ আর হিমু কে বাড়ি ফিরতে দেখেনি। রুপা আজও তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে, মাঝে মাঝেই হলুদ পাঞ্জাবী দেখলেই রুপা ভাবে ঐ বুঝি হিমু ফিরে এসেছে।
মিসির আলী আর ক্লাস নেয় না।নীলুর মত কেউ অজানা প্রশ্ন নিয়ে ক্লাস শেষে বসে থাকেনা। মিসির আলী সব ছেড়ে সমুদ্রের তীরে চলে গেছে। চারপাশে জনশূন্য এলাকা, অথই সমুদ্র ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। আজ ঘরবন্দী মিসির আলী, জীবনে এত রহস্য ভেদ করতে গিয়ে আজ সেই নিজেই রহস্য হয়ে গেছে, মিস করছে তার স্রষ্টা কে।
একটা ছোট মেয়ে যে কেবল গল্প পড়ার মানে বুঝতে শুরু করেছে তখন প্রথম পড়েছিলো হুমায়ূন আহমেদ স্যারের “দেবী” উপন্যাসটি। রাতে ঘুমালেই রানু কে দেখতে পেতো। অদ্ভুত রোমাঞ্চকর ছিলো সেদিনগুলো তার কাছে…!সেই যে প্রেমে পড়েছিলো লিখনিতে আজও মগ্ন সে। “শ্রাবন মেঘের দিন” সিনেমা দেখতে গিয়ে কুসুমের বিশ খাওয়াতে কত না কেঁদেছিলো মেয়েটা! মেয়েটি আজ ও মন খারাপের রাতে, সুখ দুঃখের সাথে হুমায়ূন আহমেদ জড়িয়ে আছে। যখনি অস্থির লাগে হুমায়ূন আহমেদের একটা বই তাকে স্থির করে দেয়। যখন কিছু ভালো লাগেনা তখন একমাত্র ভালো লাগা হুমায়ুন আহমেদ। বই হাতে নিতেই ভীনদেশে চলে যায় সে, সেখানে অদ্ভুত সব অনুভূতি কাজ করে। আর সব এতটা জীবন্ত মনে হয় যে সেই জগৎ থেকে বের হতে ইচ্ছে করেনা।
মাধ্যমিকে পড়ার সময় একাডেমিক বইয়ের ভিতর লুকিয়ে কত যে বই পড়েছি স্যারের সেটা নিজেও জানেনা। আসক্ত হয়ে গিয়েছিলাম স্যারের লেখাতে। হুম আমার কথাই বলছিলাম, ভালোবাসি স্যারের লেখাকে। শ্রদ্ধা জানাই উনার সৃষ্টির প্রতি। যখন পূর্ণ বালিকা রুপে আত্মপ্রকাশ করেছিলাম তখন হিমুর প্রেমে পড়েছিলাম। হিমুর পাগলামি, সরলতা বড্ড আকৃষ্ট করেছিলো। আর আজো একজন হিমুকেই মনের অজান্তে খুঁজে বেড়াই।
স্যারের প্রিয় কদম ফুল যখনি দেখি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি। জানিনা কদম ফুল কবে থেকে যে আমার প্রিয় ফুল হয়ে গেলো। এক গুচ্ছ কদম ভালোবাসার অনুভূতি সৃষ্টি করে মনে। একটা মানুষের লেখার কতটা অদ্ভুত ক্ষমতা থাকতে পারে, কতগুলো চরিত্র উনি তৈরি করেছেন যেগুলো জীবন্ত। স্যার চলে গেলেও তাঁর ফেলে রাখা প্রতিটা চরিত্রের মাঝে বেঁচে আছে।
ভালোবাসার এক নাম হুমায়ূন আহমেদ। তিনি জন্মেছিলেন বলেই হিমু,রুপা,শুভ্র,মিসির আলী,বাকের ভাই সহ অনেক চরিত্র জন্মেছিলো। হিমু,শুভ্র,মিসির আলী সবাই তাদের স্রষ্টা কে খুব খুব মিস করে। প্রিয় লেখক তিনি, যাকে কোনো বিশ্লেষণ দিয়ে ব্যাখা করা যায় না সে কেবলই হুমায়ূন আহমেদ।
“শুভ জন্মদিন” গল্পের যাদুকর হুমায়ূন আহমেদ।
লেখিকাঃ জান্নাত আরা পপি
Comments
Tags: জন্মদিন, হুমায়ুন আহমেদ