বিপাকে পেঁয়াজ চাষীরা : কেজি প্রতি ক্ষতি গুনছেন তিন টাকা
পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ২৬/০২/২০১৯ , ১২:২০ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জেলা সংবাদ

মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ করে গ্রামের প্রতিটি ঘর হয়েছিল পাকা। ঘরে ঘরে হয়েছিল মোটরসাইকেল। প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মুখে ছিল হাসি , মনে ছিল আনন্দ। সেই নেশায় গত কয়েকবছর ধরে পেঁয়াজ চাষ করে আসছেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের চাষীরা। গ্রামটিতে প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বাস। যে দিকে তাকানো যায় সেদিকেই পাকা বাড়ি। পেঁয়াজের মৌসুমে সারাদিন কর্মচাঞ্চল্য থাকে গ্রামটিতে । প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাক বোঝাই করে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। পেঁয়াজ চাষীদের পাশাপাশি আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের নানা ধরণের কর্মসংস্থান হয় পেঁয়াজ চাষকে ঘিরে। কিন্তু এবছর চাষীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা খরচ করে পেঁয়াজ চাষ করে ঘরে তুলছেন ২৫ থেকে ৩০ হাজার। প্রতিকেজি পেয়াজ উৎপাদন করতে চাষীদের খরচ হচ্ছে প্রায় ৭টাকা । আর সেই পেয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে চার থেকে সাড়ে চার টাকায়। কেজি প্রতি তিন টাকা ক্ষতি গুনতে হচ্ছে চাষীদের।
গত সোমবার সকালে কথাগুলো বলছিলেন শিবপুর গ্রামের চাষী আবুল কালাম। তিনি এ বছর চাষ করেছেন ১০ বিঘা জমিতে। প্রতিবিঘা জমিতে তিনি খরচ করেছে ৫২ হাজার টাকা করে। বিঘাপ্রতি জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ মন। এক বিঘা জমির পেঁয়াজের বর্তমান বাজার মূল্য ৩০ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, ভাল দাম পাওয়ার আশায় জমিতে পেঁয়াজ রেখে দিলেও তা ফেটে যাচ্ছে। ফেটে যাওয়া পেয়াজ বিক্রি হয় না। গত রবিবার ২২ মন ফেটে যাওয়া পেঁয়াজ বস্তা সহ বিক্রি করেছেন মাত্র ২২০০ টাকায়।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ চাষ করে যেভাবে এ গ্রামের উন্নতি হয়েছে, এবার সেভাবেই গ্রামের মানুষ গুলো ঋণগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছে।
আবুল কালামের সাথে কথা বলতে গিয়ে একে একে গ্রামের আরো চাষীরা জড়ো হলেন এ প্রতিবেদকের কাছে। তারাও জানালেন তাদের কষ্টের কথা। কথা হয় চাষী ভাষান আলী, রফিকুল ইসলাম, বাবুল জোয়ার্দার, হায়াত আলী, আদম আলী, আশিক গাজীসহ জনা দশেক চাষীর সাথে।