হাজতির মৃত্যুর ঘটনায় নড়াইলের জেল সুপারসহ ৩ জনের নামে মামলা
পোস্ট করেছেন: মতপ্রকাশ ডেস্ক | প্রকাশিত হয়েছে: ২৬/০৬/২০১৮ , ৫:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: আইন ও বিচার,জেলা সংবাদ

নড়াইল জেলা কারাগারে আব্দুল করিম নামের এক হাজতির মৃত্যুর ঘটনার দেড়মাস পরে আদালতে হত্যা মামলা করেছেন নিহতের পিতা আকবর শেখ। নড়াইল জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদার, জেলার তরিকুল ইসলাম ও সুবেদার হুমায়ুন কবীরের নামে নড়াইলের আমলী আদালতে ২৫ জুন বিকালে তিনি এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাহিদুল আজাদ অভিযোগকারীর জবানবন্দী রেকর্ড করে জুডিসিয়াল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, জেলার লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া এলাকার আকবর শেখের ছেলে হাজতি আব্দুল করিম গত ১৬ মে জেলা কারাগারে মারা যান। জেল কর্তৃপক্ষ করিম গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার পরিবারকে জানান। নড়াইল সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের জন্য চাপ দেয়া হয় নিহতের পরিবারের সদস্যদের। মৃতদেহের গোসল করানোর সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী আকবর শেখ জানান, জেল সুপার ও জেলার পুলিশের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানোর কারনে তারা মামলা করতে সাহস পাননি। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস জেলার আর জেল সুপার মিলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরেছে। আমি এর বিচার চাই।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আশরাফ হোসেন জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলার বিষয়ে জুডিসিয়াল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানকে তদন্ত করে আগামী ২৩ জুলাই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ১৩ মে হাজতি আব্দুল করীমের কাছে ঘুমের ট্যাবলেট পেয়ে তাকে পেটায় জোমাদ্দার তালেব ও একজন সুবেদার। এরপর তাকে কোর্টে হাজিরা দিতে আনা হয়। ১৪ তারিখে ঐ দুইজন তাকে আবারও মারপিট করে তাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়। এ সময় জেলার, জেল সুপার এবং ঐ সুবেদার মিলে বেধড়ক মারপিট করে করিমকে। কোন চিকিৎসা না দিয়ে ১৫মে রাতে আবারও মারপিট করা হয়।
এ বিষয়ে নড়াইলের জেল সুপার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, গত ১৬মে হাজতি করিম সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মিত হাসপাতাল ভবনের কলাপসিবল গেটে নিজ শরীরের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে আনলে তার মৃুত্যু হয়। নিহত আব্দুল করিম দুটি বিচারাধীন হত্যা মামলার আসামি হয়ে হাজতি হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে নড়াইল কারাগারে রয়েছেন। তাকে কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়নি বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১ মাস ১০দিন পর শুধুমাত্র হয়রানী করার জন্য এ ধরনের একটি মামলা করা হয়েছে। হাজতি করিমের আত্মহত্যার পর সুরতহাল রিপোর্ট এবং ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তিনি বাদীকে হুমকি-ধামকির কথা অস্বীকার করেন। – ইত্তেফাক অনলাইন